মা কাছিম ছা কাছিম - ইকরিমিকরি । আমাদের স্বপ্নরাজ্য
মা কাছিম ছা কাছিম

মা কাছিম ছা কাছিম

গল্প : তারিকুল ইসলাম সুমন
ছবি : নূরুস সাফা অনিক

সুন্দরবনের ছোট্ট এক খালে বাস করত এক কাছিম পরিবার। ওদের এক পরিবারে ছিল দুরন্ত এক কাছিমছানা। সবার সাথে যদিও তার ছিল খুব ভালো সম্পর্ক। সে সব সময় হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করত। এ জন্য অন্যরাও তাকে খুব ভালোবাসত।

তখন ছিল শীতকাল। একদিন তার খুব রোদ পোহাতে ইচ্ছে হলো, তাই সে খালের চর বেয়ে ওপরে উঠতে লাগল। ধীর পায়ে সে ওপরে উঠছে তো উঠছে, উ-ঠ-ছে…উ-ঠ-ছে…।

হঠাৎ ঘটে গেল এক বিপদ। সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের ফাঁকে তার খোলস গেল আটকে। ভীষণভাবে আটকে গেল। সে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করল। এতে সে আরো আটকে গেল। মনের দুঃখে কাঁদতে কাঁদতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ল।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে এলো। ওখানেই ঘুরতে ঘুরতে এলো এক চিত্রা হরিণ। সব শুনে খুউ-ব মায়া হলো তার। নিজের ডালপালার মতো শিং দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কাছিমটিকে তুলে দিয়ে বাঁচাল সে। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নিল কাছিমছানাটি।

ঘরে ফিরে মায়ের কাছে সব খুলে বলল কাছিমছানাটি। বলল, মা, মা, আমার পিঠের খোলসটির জন্যই আজ মরতে বসেছিলাম। বৈদ্য ডেকে এটাকে ফেলে দেওয়া যায় না? পিঠের ওপর এত ভারী জিনিস আমি রাখবই না।

মুচকি হাসল মা কাছিম। বলল, সে পরে ভেবে দেখা যাবে। এখন তুমি রেগে আছে, একটু বিশ্রাম নাও তো।

পরের দিন মায়ের সাথে ডাঙায় উঠেছিল ওই কাছিমছানাটি। ওরা খাবার খুঁজছিল। ঠিক তখনই বন থেকে দৌড়ে এলো এক ক্ষুধার্তশিয়াল। শিয়াল কাছে আসতেই ওরা দ্রুত নিজেদের মাথা ও পা গুটিয়ে নিল খোলসের ভেতর। হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে আবার ফিরে গেল শিয়ালটি।

খোলসের জন্যই বেঁচে গেল ওরা!

ফেরার পথে বলল মা কাছিম, কী! তোমার খোলস খুলে ফেলবে?

লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেল ছানাটির। মা বলল, রাগের মাথায় কখনো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে নেই। এতে বেশির ভাগ ভুল হয়।

আপনার মতামত দিন

Shopping Cart